Tuesday, September 27, 2016

Bangladesh VS Afganstan Cricket Match


শততম জয়ের ম্যাচ!



.১০০ সংখ্যাটাই জাদুকরি! ৯৯-এর অসম্পূর্ণতা দূর হয়ে যায় মাত্র ১-এর যোগে। ১০১ হলেই শেষ হয়ে যায় ১০০-এর আলোচনা। বাংলাদেশের ক্রিকেটে আজই কি সেই ১০০-এর দিন? ওয়ানডেতে শততম জয়ের আনন্দে আজই কি ভাসবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম!

প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান বলেই আশাটা জোরালো। আবার প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান বলে ভয়ও আছে সামান্য। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলে গেছে দলটা। শততম জয়ের আগাম ঘোষণা তাই দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আজ সেই আশা নিয়েই ভরে উঠবে মিরপুরের গ্যালারি। বাংলাদেশ অধিনায়ক

মাশরাফি বিন মুর্তজারও সেই আশায় বসতি, ‘আমরা চেষ্টা করব, দ্বিতীয় ম্যাচেই (আজ) যেন সেটা হয়। এ জন্য আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।’

১৯৯৮ সালে ভারতের হায়দরাবাদে কেনিয়ার বিপক্ষে পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয়ে অধিনায়ক ছিলেন আকরাম খান। ৫০তম জয়টা এসেছে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে। অধিনায়ক হিসেবে সেই গর্বের মালা পরেছিলেন সাকিব আল হাসান। আর শততম ওয়ানডে জয়ের গৌরব অপেক্ষা করছে মাশরাফির জন্য। তবে মাশরাফির কথায় মনে হলো, এই মালা তিনি একা পরবেন না। বিনি সুতোয় গাঁথা অর্জনের পাপড়িগুলো ছড়িয়ে দিতে চান সবার মাঝে, ‘আমি না হলেও এ সময় কেউ না কেউ তো অধিনায়ক থাকতই। এটা বাংলাদেশের জন্যই অনেক বড় অর্জন হবে।’
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শততম জয় ছাড়াও চাওয়ার আছে অনেক কিছু। নিজের ফর্মটাকে স্মৃতির পাতায় তুলে ফেলা সৌম্য সরকারের ব্যাট হাসছে না অনেক দিন। তামিম ইকবাল সর্বশেষ ম্যাচে ৮০ রানে ফিরে গিয়ে আরও একবার নিজেকে বঞ্চিত করেছেন সেঞ্চুরি থেকে। এই দুই ওপেনারের কাছেই আজ বড় ইনিংসের প্রত্যাশা। প্রথম ম্যাচের ভুল শুধরে জ্বলে উঠবেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ ধরে রাখবেন ফর্মের ধারাবাহিকতা। বল হাতে তাসকিন আহমেদ-রুবেল হোসেনরা শুরু থেকেই আগুনে বোলিং করার অভ্যাসে ফিরবেন। সাকিবের বল নেবে প্রত্যাশিত বাঁক। ফিল্ডিংও অমন গয়ংগচ্ছ হবে না—এ রকম আরও কত কী চাওয়ার আছে!
তবে সবচেয়ে বড় চাওয়া অবশ্যই জয়। শুধু শততম জয়ের উপলক্ষ বলেই নয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় নিশ্চিত করার জন্যও। মাশরাফি যেমন বলছিলেন, ‘আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলে সিরিজটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। এ জন্যই ম্যাচটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
রুদ্ধশ্বাস প্রথম ওয়ানডে জেতার পর ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের রথ সচল রাখতে বাকি দুই ম্যাচের একটি জিতলেই হয়। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে গেলে কি চলে! আইসিসির সহযোগী দেশটির সঙ্গে টেস্ট দল বাংলাদেশের দূরত্ব স্পষ্ট করে তুলতে ৩-০ ব্যবধানের জয়ই চাই। সিরিজ শুরুর আগে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও শুনিয়েছেন সেই প্রতিজ্ঞার কথা—তিন ওয়ানডেতেই জিততে চায় বাংলাদেশ। সেই জয়গুলোও প্রথম ম্যাচের মতো হারতে হারতে জিতলে চলবে না। আফগানিস্তানের মতো দলও যদি বারবারই বাংলাদেশের বিপক্ষে স্লগ ওভারে ম্যাচ নিয়ে যেতে পারে, তাহলে আর উন্নতির রেখা স্পষ্ট হলো কীভাবে? এক বছরে পর পর ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়েকে কাঁদিয়ে ফিরিয়ে যে আত্মবিশ্বাসটা সঞ্চয় করা গেছে, সেটাতে নিশ্চয়ই কোনো ঝাঁকুনি লাগতে দেবেন না মাশরাফিরা।
আজ দল নির্বাচনেও তাই কোনো ঝুঁকি নেওয়া হবে না বলেই শোনা যাচ্ছিল কাল বিকেল পর্যন্ত। তখন পর্যন্ত প্রথম ওয়ানডের দলটাকেই খেলানোর কথা ছিল এ ম্যাচেও। তবে রাতে জানা গেল, দল চূড়ান্ত হয়নি। সেটা নাকি ঠিক হবে আজ সকালে।
প্রথম ম্যাচটাকে শেষ ওভার পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারাতেই অনেক অর্জন হয়ে গেছে আফগানিস্তানের। বাংলাদেশের মতো তাই অতটা চাপ নেই তাদের ওপর। তবে শেষ ১০ ওভারের ভুল-ত্রুটি নিয়ে আক্ষেপ আছে। দলের প্রতিনিধি হয়ে কাল সংবাদ সম্মেলনে এসে লেগ স্পিনার রশিদ খান সেই ভুল শোধরানোর কথাই শুনিয়ে গেলেন, ‘শেষ ১০ ওভারে আমরা কিছু ভুল করেছি, কিছু বাজে শট খেলেছি। পরের ম্যাচে চেষ্টা থাকবে আরও ভালো ক্রিকেট খেলার।’
ক্রিকেটে সবই সম্ভব। হতে পারে, আজ আফগানিস্তান বিরাটকায় দৈত্য হয়ে দাঁড়াল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু শততম ওয়ানডে জয়ের ক্ষুধা যাদের মনে, ঘরের মাঠে তারা কি সেটা হতে দেবে? ১০ মাস পর ওয়ানডেতে ফেরার অস্বস্তিও আজ থাকবে না। ১০০-এর জাদুকরি স্পর্শ পাওয়ার ম্যাচে সবকিছুতেই এক শতে এক শ পেতে চাইবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

No comments:

Post a Comment